ভোলা প্রতিনিধি: ভোলার তজুমদ্দিনের দক্ষিণ পশ্চিম চাঁচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবনের সেপটিক ট্যাঙ্কের বিষাক্ত গ্যাসে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে দু’জন নির্মাণ শ্রমিক ও একজন স্থানীয় বাসিন্দা। অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে একজনকে।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা জানান, রোববার সেপটিক ট্যাঙ্কের সেন্টারিংয়ের খুঁটি খুলতে যান তিনজন শ্রমিক। ট্যাঙ্কের ভেতরে ঢোকার পর বিষাক্ত গ্যাসে শ্রমিক শামিম (২৩) অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে অপর শ্রমিক রাকিবও (২৪) আক্রান্ত হন। তাদের উদ্ধার করতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা কাঠমিস্ত্রি আলাউদ্দিন (৪০) ট্যাঙ্কে পড়ে যান। এলাকাবাসীর সহায়তায় জীবিত উদ্ধার হন জুয়েল নামে এক কৃষি শ্রমিক।
স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে তজুমদ্দিন ও ভোলা সদর থেকে ফায়ার সার্ভিসের দুটি টিম তিনজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেপে নেয়। সেখানে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
রাকিব ও শামিমের বাড়ির সোমাপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। আর আলাউদ্দিনের বাড়ি ঘটনাস্থলের পাশে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সোহেল কবির জানান, ট্যাঙ্কের ভেতরে মিথেন ও নাইট্রোজেন গ্যাস জমা ছিল। এতেই তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভবনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তমা কনস্ট্রাকশনের পক্ষে লালমোহনের ঠিকাদার রাশেদুজ্জামান পিটার কাজটি প্রায় এক বছর আগে শুরু করেন। নির্মাণকাজটি তদারকির জন্য কোনো অভিজ্ঞ প্রতিনিধি বা ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন না। এমনকি কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা স্থানীয় উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরের কোনো তদারকি ছিল না। এ ছাড়া কাজের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকদের নিরাপত্তায় কোনো ধরনের পদক্ষেপ তারা নেননি। তবে উপজেলা প্রকৌশলী অহিদুজ্জামান জানান, দায়িত্বশীল কারও উপস্থিতি ছাড়া কেন কাজ চলছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক ফারুক আহাম্মদ জানিয়েছেন, ট্যাঙ্কের মধ্যে অক্সিজেনের অভাবে এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে। আর শ্রমিকদের নিরাপত্তায়ও কোনো পদক্ষেপ ছিল না।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ইউএনও পল্লব কুমার হাজরা বলেন, এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিহতদের পরিবারপ্রতি ২০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।